সার-সংক্ষেপ:- ইংরেজ আমলের বাঙালি হঠাৎ-রাজা ও হঠাৎ-বাবুদের প্রবর্তিত এক ধরনের বিকৃত কলকাতা কালচার- এর ঘূর্ণাবর্তে সাধারণ বাঙালির লোকপ্রতিভার অপমৃত্যু হয়েছে। আধুনিক কবিদের মতন বটতলায় তখন কোনো বাঙালি কবিগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়নি।
মুকুন্দরাম, ভারতচন্দ্রর মতন কবিও তাঁরা নন। তাঁরা কবিয়াল, কবিতা রচনা করতেন এবং ঢোল-কাঁসি বাজিয়ে সেই কবিতা আসরে গেয়ে বেড়াতেন। আসর বসত মাঠে-ঘাটে, হাটে-বাজারে, পূজা-পার্বণে-উৎসবে। কিন্তু সে হয়তো অতীত কোনো কালে। গ্রামের সাধারণ লোক সেই কবি গান শুনে খুশি হয়ে দক্ষিণা ও পুরস্কার দিতেন এবং কবিয়ালরা তাতেই জীবন ধারণ করতেন।
কবিগান গেয়ে কবিয়ালদেরও বেশ দুমুঠো অন্ন জুটত। নবাবি আমলের শেষে ছোট বড় একাধিক নবাবের চিত্ত বিনোদন করে কবি গানের মধ্যে বিকৃতির লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। এমন সময় কলকাতার নতুন বাঙালি রাজা-মহারাজা ও ধনী লোকরাও শখ মেটাবার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠলেন। কবিয়ালদের ডাক পড়ল কলকাতা শহরে।
শহরের হাততালির মতন তার প্রতিধ্বনি দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে না। লোকে বলবে, কলকাতার কবিয়াল, বর্ধমান ও বীরভূমের কবিয়ালের চেয়ে তার খাতির বেশি, মূল্যও বেশি। কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়িতে কবিগান গাইলে, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির থেকে ডাক পড়বে, বর্ধমানের মহারাজাও আমন্ত্রণ জানাবেন, কাশিমবাজার, মুর্শিদাবাদ থেকেও ডাক আসতে দেরি হবে না।
ভোলা ময়রার মতন স্বাধীনচেতা আর কেউ ছিলেন কি না সন্দেহ। প্রত্যেকেরই এক-একজন পেট্রন ছিলেন এবং মোসাহেবি করেই তাঁদের চলতে হত। ভোলানাথের কিছুরই বালাই ছিল না। একবার মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত জাড়া গ্রামে ‘রায়’ পদবিধারী এক ধনিক ব্রাহ্মণ জমিদারের বাড়ি কবিগান হয়। জাড়ার কাছে মানিককুণ্ডু গ্রাম মুলোর জন্য বিখ্যাত। ভোলা ময়রা ও যজ্ঞেশ্বর ধোপা জাড়ায় জমিদার বাড়ি কবি গাইতে যান।
NOTE- ৭ পৃষ্ঠার‘বটতলার কবি’ শিরোনামের সম্পূর্ণ প্রবন্ধটি পাঠকরতেউপরেরলিংকথেকে PDF ফাইলটিডাউনলোডকরুন
Be the first to review “বটতলার কবি”