Description
লজ্জাশীলতার গূঢ়তত্ব
নৃপেন্দ্রকুমার বসু ও আরধনা দেবী
[১৩৪১ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত]
ভাবুক বলেন-লজ্জাই রমণীর রমণীয় ভূষণ, বৈজ্ঞানিক বলেন- লজ্জাই নারীর যৌন-জীবনের একটা বরণীয় বিশেষত্ব; সুতরাং নারীর যৌনবোধের মায়া-মঙ্গলে প্রবেশ করিবার পূর্বে আমাদিগকে লজ্জার রহস্য- জাল ছিন্ন করিতে হইবে।
শুধু আমাদের দেশে কেন, জগতের সকল সভ্য দেশেই পুরুষ-শিশু যে বয়সে নগ্ন হইয়া বেড়াইবার স্বাধীনতা পায়, স্ত্রী-শিশুরা সে বয়সে অন্তত নিম্নাঙ্গ ঢাকিয়া না চলিলে সকলের চক্ষে তাহা বিসদৃশ ঠেকে। পারিবারিক শাসন ও সামাজিক শিক্ষার ফলে ‘আমাদের দেশে ভদ্র-ঘরের চারি-পাঁচ বৎসরের মেয়ে অপরিচিত বা অল্পপরিচিত। বিশেষভাবে পুরুষ) লোকের সম্মুখে উলঙ্গ হইতে কুণ্ঠা বোধ করে।
নাভিনিম্নস্থ অঙ্গপ্রত্যঙ্গাদি ও তাহাদের কার্যাবলী ঘেরিয়া কত বড় একটা গভীর সঙ্কোচবোধ সঞ্চিত থাকে-বালিকার মাতা, পিতামহী প্রমুখ আত্মীয়ারা শৈশব হইতেই তৎসম্বন্ধে একটা অনিরূপিত ধারণা বদ্ধমূল করিয়া দেন। কাষেই এই লজ্জাভাবটি শিশুকাল হইতে অভ্যাসগত হইয়া, পর বয়সে নিজের নিকট তাহা খুব সহজসাধ্য ও অপরের নিকট স্বাত্মানিক বলিয়া মনে হয়।
হ্যাভলক্ এলিস্ কিন্তু লজ্জাবোধের দুইটি দিক্ পৃথক করিয়া দেখাইয়াছেন; একটি-জান্ত বা দেহগত (animal or physiological), অন্যটি সামাজিক বা অধিগত (social or acquired), মোট কথা, নারীর মধ্যে এই লজ্জার সংস্কার লজ্জা- স্বভাবধর্ম’ নহে বংশানুগতিকতায় কতকটা চলিয়া আসিলেও, পূরাপুরি প্রকৃতিপ্রদত্ত নহে, অনেটা মাতা বা অন্যান্য অভিভাবিকার নিকট হইতে অর্জিত।
কন্যার আপনার ভবিষ্যং সুখকে গভীরতর করিবার ও সমাজের অপবাদ হইতে আত্মরক্ষা করিবার পক্ষে এই ব্রীড়া-যে কতখানি কার্যকরী, তাহার একটা দুর্মোচ্য ছাপ বালিকার বুদ্ধিবৃত্তি পরিস্ফুট হইবার সঙ্গেসঙ্গেই তাহার মনের পটভূমিকায় লাগাইয়া দেওয়া হয়।
এগার-বার বৎসর বয়স হইতেই আমাদের দেশের বালিকাদের মনে লজ্জাশীলতার অর্জিত অভ্যাস দ্বিতীয়-প্রকৃতিতে পরিণত হইয়া যায়। তারপর এই লজ্জাশীলতা তাহার যৌনবোধের সহিত সখ্যতা-সূত্রে আবদ্ধ হইয়া, প্রৌঢ়ত্বের প্রান্তসীমা পর্যন্ত আধিপত্য করে। ইহা আমাদের অভিজ্ঞতা-লব্ধ সত্য যে, অকালে যৌনবোধের উন্মেষ হইলে, বালিকারা অতিরিক্ত লজ্জাশীলতা প্রকাশ করে।
Note- ২৮ পৃষ্ঠার প্রবন্ধটি পাঠ করতে উপরের লিকং হতে PDF ফাইলটি ডাউনলোড করুণ
আরও পড়ুন
লজ্জাশীলতার গূঢ়তত্ব
Leave a Reply