Description
ভারত-রমণী
ধীরেন্দ্রনাথ চৌধুরী
সূত্র- ১৯০৫ সালে প্রকাশিত ‘প্রবাসী’ পত্রিকা হতে সংগ্রহীত।
“না জাগিলে যত ভারত কামিনী, পোহাবে না কভু এ দুখ যামিনী।”
কালিদাস তাঁহার রঘুবংশের প্রারম্ভে বলিয়াছেনঃ-
স্বাগর্থাবিব সংপৃক্তৌ বাগর্থপ্রতিপত্তয়ে। জগতঃ পিতরৌ বন্দে পার্ব্বতীপরমেশ্বরেী।
বাক্যের সঙ্গে অর্থ যেরূপ সংযুক্ত, প্রকৃতিপুরুষ সেইরূপ সম্পৃক্ত। বাক্য এবং অর্থ যেরূপ দুইটা স্বতন্ত্র পদার্থ নহে, একটা বস্তুর দুই দিক্ মাত্র, স্ত্রী পুরুষও সেইরূপ একটী অখণ্ড বস্তুর দুইটী দিক্। আমরা কখনও এরূপ কল্পনা করিতে পারি না, যে প্রথমে একটা শব্দের উৎপত্তি হইল, কিছুদিন তাহা অর্থহীন, ভাবহীন রহিল, কালক্রমে তাহার সঙ্গে অর্থ বা ভাব (Idea) আসিয়া যুক্ত হইল।
পক্ষান্তরে ইহাও আমাদিগের কল্পনার অতীত, যে প্রথমে কেবল মাত্র একটা অর্থ ছিল, পরে তাহার সঙ্গে বাক্য আসিয়া যুক্ত হইয়াছে। সেইরূপ আমরা এরূপ কোনও সমাজ কল্পনা করিতে পারি না যেখানে কেবলমাত্র পুরুষ ছিল, পরে রমণী আসিয়া যোগ দিয়াছে, অথবা প্রথমে কেবলমাত্র রমণী ছিল, পরে পুরুষ আসিয়া যোগ দিয়াছে।
সমাজ বলিলে স্ত্রী পুরুষের সমষ্টি বুঝায়। পুরুষ ও রমণী উভয়কে লইয়াই সমাজ। ইহারা সমাজবৃক্ষের দুইটা স্কন্ধ, অথবা সমাজপত্রের দুইটা পৃষ্ঠা। উভয়ের রং বিভিন্ন হইতে পারে, কিন্তু আয়তনে উভয়ের সয়তা নিশ্চিত, একপত্রের দুইপৃষ্ঠার মধ্যে এক পৃষ্ঠা অপর পৃষ্ঠা হইতে বড় হইতে পারে না, এরূপ হওয়া অসম্ভব। সুতরাং উভয়ের শক্তিসামর্থ্যও সমান হইবে, অম্লাধিক হওয়া যুক্তিবিরুদ্ধ। কারণ, এক পৃষ্ঠা অপর পৃষ্ঠা হইতে বড় হইতে পারে না। কিন্তু বস্তুতঃ আমরা দেখিতেছি যে একপৃষ্ঠা অপর পৃষ্ঠা অপেক্ষা অনেক বড় হইয়া পড়িয়াছে। ইহার কারণ কি?
এবং কিরূপে এই স্বতঃসিদ্ধ নিয়মটীর এই দৃশ্যমান ব্যভিচারের কারণ নির্দেশ করা যাইতে পারে? ইহার কারণ নির্দেশ করিবার জন্য অধিক দূরে যাইতে হইবে না। স্থূলতঃ আধ্যাত্মিক, মানসিক, শারীরিক সকল বিষয় লইয়া স্ত্রী পুরুষের শক্তি সমান হওয়া যুক্তিসঙ্গত হইলেও গর্ভধারণ, সন্তানপ্রসব ও লালনপালনাদিতে নারী-জাতির শক্তি এত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, যে স্বাভাবিক নিয়মেই পুরুষ অপেক্ষা শারীরিক শক্তিতে • নারীজাতি হীন হইয়া পড়িয়াছে। এসমস্ত প্রকৃতিনির্দিষ্ট, ইহাদিগের মধ্য হইতে কোন একটাকে হস্তান্তর করা অসম্ভব।
Note- ১০ পৃষ্ঠার প্রবন্ধটি পাঠ করতে উপরের লিকং হতে PDF ফাইলটি ডাউনলোড করুণ
আরো পড়ুন-
ভারত-রমণী
Leave a Reply