Description
আবার বলি, শব্দের বানান ও লিখন এক নহে। শব্দের ধ্বনি-বিশ্লেষণের নাম বানান অর্থাৎ বর্ণন, এবং ধ্বনির মূর্তি-প্রদর্শনেব নাম লিখন। প্রথমটিতে কান, দ্বিতীয়টিতে চোখ আবশ্যক। প্রথমটি গীতকলাব, দ্বিতীয়টি চিত্রফলার অন্তর্গত মনে করা চলে। স্বরের ব্যঞ্জনায় গীতকলা, রংগের সমাবেশে চিত্রফলা। ভাষা-অর্থযুক্ত ধ্বনি, বাগলা ভাষা-অর্থযুক্ত ধ্বনিবিশেষ-সুববিশেষ। সুব নৈসর্গিক, অক্ষর কৃত্রিম। বাগলা সুবের স্ববলিপি নাম বাগলা অক্ষব। ক এই ধ্বনিষ বাগলা লিপি অংকুশযুক্ত ত্রিভুজ। এই মূল আদর্শ বাখিয়া আকাবের পরিবর্তন করিলেও ক লিপি থাকিবে। এই কারণে হাতেব লেখা ক অক্ষবেব নানা আকার ঘাটলেও ক থাকে।
কিন্তু ক্রু এবং ক্র অক্ষরে মূল আদর্শ নাই। নাগরী জ অক্ষরে ত্রিকোণত্ব নাই। সেই নাগবী অক্ষরেব নীচে বাগলা ত বসাইয়া ক্র অক্ষরেব উৎপত্তি মনে হয়। পরে দেখা যাইবে, অনেক বাগলা যুক্তাক্ষবে নাগবী অক্ষব বহিয়া গিয়াছে। আমি বলি এই রূপান্তর অনাবস্তক, আদর্শ এক রাখায় শিক্ষার্থীব সুবিধা আছে। কওত এব যোগে যে অক্ষর, তাহাতে কওত প্রদর্শন কবিলে ক্ষতি কি? ছাপাখানায় সে অক্ষর সম্প্রতি নাই বলিয়া কৃত ছাপিতে হইয়াছে। নূতন অক্ষর নির্মিত হইলে কৃত লিখিতে হইবে না, ক এর নীচে ত লেখা চলিবে।
প্রস্তাবের উদ্দেশ্যের দোষ গুণ বিচাব করুন, তার পর ক এব নীচে’ ত, কি ক এর পাশে ত বসাইলে উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে তাহাব বিচাৰ আসিবে।
এক শ্রদ্ধেয় লেখক অক্ষর-সংস্কাবের বিরুদ্ধে যে হেতু প্রদর্শন করিয়াছেন, তাহা এখানে উদ্ধৃত হইল। তাঁহাব বানান অবিকল বাখা গেল। তিনি লিখিয়াছেন, “অক্ষ-রের রূপ কয়েক স্থলে সহজে সংস্কাৰ্য্য হইতে পারে। কিন্তু যুক্তবর্ণের সংস্কাব সর্ব্বত্র সম্ভবে না। আপনি যুক্তবর্ণ ভাঙিয়া সংখ্যা কমাইতে চেষ্টা করিয়াছেন, কিন্তু কয়েকটি স্থলে মাত্র কৃতকার্য্য হইয়াছেন। ইহাতে শিশু শিক্ষার্থীব বর্ণ শিক্ষা-বিষয়ে কিছু সাহায্য হইবে, অল্প সময় ও পরিশ্রম লাগিবে। কিন্তু বয়স্কেব পক্ষে কতটা উপকার হইবে, তাহা বিচার্য্য।”
“শিশুশিক্ষার্থীর উপকার ভিন্ন এই পবিবর্তনে আর বিশেষ উপকার দেখি না। কেন না অধিকাংশ স্বলে আপনিও প্রচলিত রূপ রাখিতে বাধ্য হইয়াছেন। থ-ফলা ব-ফলা রেফ ইত্যাদি চিহ্ন আপনি অপরিবর্তিত রাখিয়াছেন। ‘ক্ষ’ প্রভৃতি যুক্তবর্ণের পরিবর্তনেব চেষ্টা কবেন নাই। কাজেই কতিপয় পরিবর্তনে ছেলেদেব পরিশ্রম লাঘব হইবে কি?”
আরো পড়ুন-ভাষা শিক্ষা
Leave a Reply