Description
পারসীজাতির ধর্ম সমাজ
হেমলতা দেবী
প্রকাশ ১৩১৭ বঙ্গাব্দ
পারসীদিগের আদিম বাসস্থান পারস্যদেশে। প্রাচীন পারসী রাজ্য মুসলমানদিগের দ্বারা অধিকৃত হইলে পর সমগ্র পারসীজাতি ক্রমে ক্রমে মুসলমান হইয়া পড়িল। ইহাদের মধ্যে অল্প কয়েকজন ভারতবর্ষে আসিয়াছিল। প্রবাদ আছে যে স্বদেশী বেশ, অস্ত্র এবং গোহত্যা বর্জন করিবার সর্তে তাহারা এদেশে বাস করিবার অধিকার প্রাপ্ত হয়।
এখানে, ভিন্ন ধৰ্ম্ম ও ভিন্ন জাতীয় লোকদিগের সঙ্গে মিলিত হইয়া তাহারা আপনাদের ভাষা ও আপনাদের সনাতন ধৰ্ম্মশাস্ত্রের জ্ঞান প্রায় বিস্তৃত হইয়াছিল। কিন্তু একটি বিষয়ে তাহারা সতর্ক ছিল। যে কয়েকটি ধর্মগ্রন্থ তাহাদের সঙ্গে ছিল সেগুলিকে বিশেষ যত্নে তাহারা রক্ষা করিয়াছিল। এই সকল ধৰ্ম্মপুস্তকের যথার্থ ধারণা যদিচ তাহাদের মনে ছিল না তথাপি প্রধান পুরোহিতদের মধ্যে বংশানু-ক্রমে ইহাদের মোটামুটি তাৎপর্য্য কতকটা পরিমাণে প্রচলিত হইয়া আসিতেছিল।
আন্তর্জাতিক বিবাহ ইত্যাদির দ্বারা ক্রমে ক্রমে ইহারা হিন্দুদিগের সহিত মিশ্রিত হইয়া গিয়া প্রায় হিন্দুই হইয়া পড়িয়াছিল। এমন কি, ইহারা ইচ্ছার সফলতা কামনা করিয়া হিন্দু দেবমন্দিরে মানৎ করিত। পরে ভারতবর্ষে মুসলমান আগমনের সঙ্গে সঙ্গে এই পারসীরা অনেকগুলি মুসলমান রীতিনীতিও গ্রহণ করিল এবং প্রসিদ্ধ মুসলমান পীরদের দরগাগুলিতেও পূজা দিতে লাগিল।
এই সময় ইহারা আপনাদের সনাতন ধর্ম সম্বন্ধে যদিও প্রায় আর কিছুই জানিত না তথাপি ঈশ্বর এক এবং একব্যক্তির একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করা উচিত নহে শাস্ত্রের এই ছাট বাক্য ইহারা কখনো বিস্মৃত হয় নাই। ইহারা প্রাচীন পারসী ভাষাতেই প্রার্থনামন্ত্র সকল উচ্চারণ করিত কিন্তু তাহার একটি বর্ণেরও ভাব তাহারা হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিত না।
কয়েকজন পুরোহিত ব্যতীত আর কেহই তখন পারসী ভাষা ও সেই শাস্ত্রোপদিষ্ট মতগুলি সম্বন্ধে কিছুই জানিত না। হিন্দুদের ও নিজের অনুষ্ঠানগুলি পালন করিয়াই তাহাদের দিন কাটিত। পারসীধর্ম্মের মত ও উপদেশগুলি সম্বন্ধে একটি সাধারণ ভাবের অস্পৃষ্ট আভাস তাহাদের মনে ছিল; কেবল তাহাদের শাস্ত্রের নীতি উপদেশ সম্বন্ধে এই কথাটি তাহারা স্পষ্টরূপে জানিত যে শুচিন্তা, সুবাক্য ও সুকাৰ্য্যই কল্যাণকর। বর্তমান শতাব্দীর আরম্ভকালে পারসীদের অবস্থা এইরূপ ছিল।
NOTE- পারসীজাতির ধর্ম সমাজ ৫ পৃষ্ঠার সম্পূর্ণ প্রবন্ধটি পাঠ করতে উপরের লিংক থেকে PDF ফাইলটি ডাউনলোড করুণ।
আরও পড়ুন
ওমর খৈয়ামের ধর্মমত
Leave a Reply