Description
ধর্মের জয়
রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী
উৎকট প্রত্নতাত্ত্বিকেরাও স্বীকার করিতে কুন্ঠিত হইবেন না যে, অন্তত তিন হাজার বৎসর ভূমন্ডলে পাঠশালার সৃষ্টি হইয়াছে; এবং এই তিন হাজার বৎসর ধরিয়া গুরু মহাশয়রা বিনীত শিষ্যগণকে যথা ধর্ম তথা জয় এই নীতির অভ্যাস করিতে উপদেশ দিয়ে আসিতেছেন। আতঙ্ক বিহ্বল শিষ্যবর্গ ধর্মের স্বীকার করিতে বাধ্য হয় বটে, কিন্তু সংসার ক্ষেত্রে সর্বত্র ধর্মের জয় হওয়া উচিৎ কি না তদ্বিষয়ে তাদের মনে মধ্যে একটা সংশয় বাধিয়া যায়।
মনুষ্যগণ এতকাল ধরিয়া শৈশব কালে যথা ধর্ম তথা জয় এই নীতি কন্ঠস্থ করিয়া আসিলেও আজিকার দিনে ধর্মকে তাহরা চারি খানি পায়ের মধ্যে তিন খানি হাড়াইয়া নিতান্তই খঞ্জের ন্যায় বিচরণ করিতে হইত না। নতুবা এই তিন হাজার বৎসরে মনুষ্য জাতির অন্য বিষয়ে এত উন্নতি সত্ত্বেও ধর্ম বিষয়ে তাহার উন্নতি আদৌ ঘটিয়াছে কি না, সে বিষয়ে বড় বড় পন্ডিত শংসয় করিতেন না।
তিন হাজার বৎসর পূর্বে যেমন, এখনও ঠিক তেমনি আর্তের ও ব্যাথিতের করুণ স্বর দয়াময় জগৎকর্তার অভিমূখে উথ্থিত হইতেছে, কিন্তু জগৎকর্তার হৃদয় বিচলিত হইতেছে না। ঠিক তেমনি ভাবে সবল দুর্বলের হৃদয় রক্ত পান করিয়া আপনার তৃষ্ণা নিবারণের চেষ্টা করিতেছে, কিন্তু কোন ন্যায় পরায়ণ বিধাতা সেই অত্যাচারের প্রতিকার করিতেছে না।
যখন আমরা যথা ধর্ম তথা জয় এই নীতি বাক্যের উল্লেখ করি, তখন আমরা সেই অদৃশ্য দুর্বোধ্য জগৎ বিধানকেই লক্ষ্য করিয়া উহার উল্লেখ করি। অপরাধ করিলে রাজা দন্ড দিতে পারেন নাও পারেন, সমাজ শাস্তি দিতে পারেন নাও পারেন, রাজাকে উৎকোচ দেওয়া সহজ, সমাজকে প্রতারিত করা সহজ, কিন্তু যদি রাজার ভয় না থাকিত, সমাজের শাসনের ভয় যদি একেবারেই না থাকিত, তাহা হইলে শুধু ধর্মের বিধানে সমাজ চলিলে কি অবস্থা হইত ?
NOTE- চৌত্রশ পৃষ্ঠার ‘ধর্মের জয়’ শিরোনামের নিবন্ধটি পাঠ করতে উপরের লিংক থেকে PDF ফাইলটি ডাউনলোড করুন
নীচের লিংক থেকে আরও পড়ুন
ধর্ম বিষয়ক প্রবন্ধ
সমাজ বিষয়ক প্রবন্ধ
Leave a Reply