Description
ধর্মের অনুষ্ঠান
রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদি
সূত্র- ১৯১৩ সালে প্রকাশিত রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদি’র-রচনাবলী।
পরের দ্রব্য না বলিয়া লইলে চুরি করা হয় এবং সকলে মিলিয়া চোরকে পুলিসে দেয়। ইহার অর্থ কতকটা বুঝা যায়। কেন না, চুরি ব্যাপারে এক পক্ষের সম্পূর্ণ লাভ হইলেও অপর পক্ষের সম্পূর্ণ হানি। অতএব চোরের কৃত কৰ্ম্ম অপর পক্ষের আপত্তিজনক হইবেই, ইহাতে আশ্চর্য্য কি?
আমার আর এক শ্রেণীর কর্ম্ম আছে, তাহাতে কেন যে আর্মার প্রতিবেশিবর্গের চিত্তবিক্ষোভ উপস্থিত হয় এবং আমার শাসনের জন্য তাঁহাদের একটা বলবতী স্পৃহা জন্মে, তাহা সহজে বুঝা যায় না। মনে কর, আমার প্রতিবেশিবর্গ কতিপয় বিশিষ্ট ধর্মানুষ্ঠানের পক্ষপাতী এবং এই সকল অনুষ্ঠানের সম্পাদন দ্বারা তাঁহাদের পরকালে এবং ইহকালে নানাবিধ শ্রেয়ঃ সংসাধিত হইবে, ইহাই তাঁহাদের বিশ্বাস।
আমি তাঁহাদের বিশ্বাসের কোনরূপ সমালোচনা করিতে চাহি না এবং তাঁহাদের অনুষ্ঠানেও কোনরূপ বাধা প্রদান করি না। কিন্তু আমার নিজের বিশ্বাস যদি তাঁহাদের অনুষ্ঠিত কৰ্ম্মে যোগ দিতে আমাকে উৎসাহিত না করে, তাহা হইলে তাঁহারা সকলে মিলিয়া কেন আমাকে নিগৃহীত করিবেন, আমি তাহা বুঝিতে অসমর্থ।
ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম অনুষ্ঠানের জন্য যাহা কিছু প্রত্যবায়, তাহা আমারই ঘটিবে; আমার প্রতিবেশীদিগকে তাহার ফলভাগী হইতে হইবে না; এবং তাঁহারা যে সকল শ্রেয়োলাভে সমর্থ হইবেন, আমিই সে সকল শ্রেয়োলাভে বঞ্চিত হইব।’ হানি হইবে আমার এবং আমি সেই হানিস্বীকারে প্রস্তুত আছি; অন্যের তাহাতে মাথাব্যথা ঘটে কেন?
পীনাল কোডে, ধৰ্ম্মশাস্ত্রে ও নীতিশাস্ত্রে যে সকল মহাপাতকের উল্লেখ আছে, তাহাদের মধ্যে কোনটাই প্রচলিত ধৰ্ম্মপদ্ধতির বিরোধা- চরণের মত সমাজের চক্ষে নিন্দনীয় নহে। চোর ও ব্যভিচারী রাজ- শাসনে দণ্ডিত হইলেও সমাজের নিকট তাহার ক্ষমা থাকিতে পারে; কিন্তু প্রচলিত রাজশাসনে ধর্মবিরোধীর দণ্ডের ব্যবস্থা না থাকিলেও সমাজের নিকট তাহার ক্ষমা নাই। সে সমাজের নিকট উৎকট পাপে পাতকী; সমগ্র সমাজের শক্তি তাহাকে উরগক্ষত অঙ্গুলির ন্যায় হাঁটিয়া ফেলিবার জন্য ব্যাকুল।
Note- ২০ পৃষ্ঠার প্রবন্ধটি পাঠ করতে উপরের লিকং হতে PDF ফাইলটি ডাউনলোড করুণ
আরো দেখুন
Leave a Reply